এই পৃথিবী যেমন বিচিত্র, তার চেয়ে হাজার গুণ বেশি বিচিত্র অসীম মহাকাশ। কারণ বিবিসির তথ্যমতে, আমাদের সৌরজগতের বাইরে এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজারটি গ্রহ আবিষ্কার করেছেন
বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে দুই হাজার তিনশ’টি গ্রহ এই পৃথিবী থেকে দেখা যায়নি, শুধু টেলিস্কোপ ও বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে মহাকাশ থেকে দেখা গেছে। আর বাকি প্রায় সাতশ’টি গ্রহ এই পৃথিবী থেকেই
দেখা গেছে। এর মধ্যে আছে গ্যাসীয় গ্রহ, তুলার মতো গ্রহ, জন্ম হচ্ছে এমন গ্রহ, পাথুরে গ্রহ …+… ইত্যাদি। তবে হাজার হাজার গ্রহ আবিষ্কার হলেও বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত কোনো গ্রহেই যেতে পারেননি। সম্প্রতি কিছু গ্রহ আবিষ্কার হয়েছে, যা ৬০০ থেকে ১২০০ আলোকবর্ষ দূরে। এগুলোতে আলোর বেগে (সেকেন্ডে প্রায় ৩ লাখ কিলোমিটার) গেলেও বিজ্ঞানীদের জন্য ৬০০ থেকে ১২০০ বছর সময় লাগবে। তবে আশার কথা হলো, ২০৩০ সালের মধ্যে নাসার বিজ্ঞানীরা মঙ্গল
গ্রহে যাবেন। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে ৬০ কোটি ডলার ব্যয়ে নাসা কেপলার নামে দূরবীক্ষণ পাঠিয়ে ছিল। সেই কেপলার এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ১০০টি গ্রহ আবিষ্কার করেছে। এই তো গত বছরের শেষ ও জানুয়ারিতে আবিষ্কার করল কেপলার-২২-বি, কেপলার-২০-ই ও কেপলার-২০-এফ নামক গ্রহ। আর অতি সম্প্রতি এই কেপলারই আবিষ্কার করল আরও ৩টি গ্রহ। এই খবর প্রকাশিত হয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারস’-এ।
এই গ্রহ আবিষ্কারক কর্নেল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মহাকাশে রয়েছে এই পৃথিবীর মতো আরও ৩টি গ্রহ। পৃথিবীর মতো বিশেষ দূরত্বে ওই গ্রহগুলো তার নক্ষত্র বা সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। আবহাওয়াও পৃথিবীর মতোই, বেশি ঠাণ্ডাও নয়, বেশি গরমও নয়। মহাকাশে পাঠানো নাসার কেপলার টেলিস্কোপ ১ লাখ ৫০ হাজার নক্ষত্রের ছবি পর্যবেক্ষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। ওই ৩টি গ্রহ হ্যাবিটাল জোনে নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। হ্যাবিটাল জোন হচ্ছে—গ্রহগুলো আবর্তনের এমন মহাশূন্য, যা অতি শীত বা গরম নয়। তাই সেখানে থাকতে পারে নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু। নক্ষত্র ৩টা মহাকাশের সিগনাস ও লিরা অঞ্চলে অবস্থিত। ওই অঞ্চল দুটি এই পৃথিবী থেকে কয়েক হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। সেখানে পানিও থাকতে পারে। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জেমি লয়েড বলেছেন, ‘হ্যাবিটাল জোনের দেড় লাখ নক্ষত্রের ছবি বিশ্লেষণ করে ওই গ্রহগুলোর ঔজ্জ্বল্য, দূরত্ব, নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান গ্রহগুলোর অবস্থান ও অন্যান্য বিষয়গুলো হিসাব করা হয়েছে। জীবন ধারণের উপযোগী পরিবেশ রয়েছে কি-না তার প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। রোবট পাঠিয়ে সেটা জানা সম্ভব হতে পারে। বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই আশা করছেন, এই পৃথিবীর মতো গ্রহ আবিষ্কারের। আর এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা এক ধাপ এগিয়ে গেলেন। গত বছরের অক্টোবরে মার্কিন হার্ভার্ড স্মিথসোনিয়ান সেন্টারের বিজ্ঞানীরা ঐউ-৮৫৫১২-ই নামে গ্রহ আবিষ্কার করেছিলেন। তবে এই গ্রহে বার্ষিক গতিতে বছর হয় মাত্র ৫৮ দিনে।
No comments :
Post a Comment
আশা করি আমাদের লেখা গুলি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।আমাদের সাইটের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিবেন।আমাদের কে বেশি বেশি মন্তব্য করুন।আপনাদের প্রতিটি মন্তব্য আমাদের নিকট অনেক গুরুত্বপূর্ণ।আশা করি সাথেই থাকবেন।মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ